ভারতের চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে টি ২০ আন্তর্জাতিকে শতরান হাঁকালেন দীপক হুডা। ডাবলিনের মালাহাইডে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টি ২০ আন্তর্জাতিকে ২৯ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। আজ তিনে ব্যাট করতে নেমে তিনি হাঁকালেন বিধ্বংসী শতরান। ২৭ বলে ৫০ রান পূর্ণ করার পর শতরান পেলেন ৫৫ বলের মাথায়। তার হুডার শতরান ও সঞ্জু স্যামসনের কেরিয়ারের সেরা ইনিংসের সৌজন্যে ভারত আইরিশদের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে ২২৫ রান তুলে ফেলল। হুডার শতরান ভারতের হয়ে টি ২০ আন্তর্জাতিকে প্রথম শতরানটি করেছিলেন সুরেশ রায়না। এ ছাড়া রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলও টি ২০ আন্তর্জাতিকে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।
গুঞ্জন আছে কোহলিএ অফ-ফর্মের কারণে বাদ পরতে পারেন এবারের বিশ্বকাপ থেকে সেই জায়গায় খেলবেন দীপক হুডা
রোহিতের চারটি ও রাহুলের ২টি টি ২০ আন্তর্জাতিক শতরান রয়েছে। আজ সেই তালিকায় নাম লেখালেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে আইপিএলে দুরন্ত ফর্মে থাকা হুডা। প্রতিপক্ষ দুর্বল আয়ারল্যান্ড হলেও হুডা যে দায়িত্বশীল ইনিংস খেললেন তা মনে রাখবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
৯টি চার ও ৬টি ছয়ের সাহায্যে ৫৭ বলে হুডা ১০৪ রান করে আউট হন। সঞ্জু স্যামসন করেন ৪২ বলে ৭৭। তিনি ৯টি চার ও চারটি ছয় মেরেছেন। কেরিয়ারের পঞ্চম টি ২০ আন্তর্জাতিকেই এই শতরান দীপক হুডার টি ২০ বিশ্বকাপের জন্য দলে থাকা কার্যত নিশ্চিত করে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
সঞ্জুর কামব্যাকে অর্ধশতরান টস জিতে আজ ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া। ভারত অধিনায়ক হিসেবে দুটি ম্যাচের দুটিতেই তিনি টস জিতলেন। ২.১ ওভারে দলগত ১৩ রানের মাথায় ঈশান কিষাণ আউট হন। মার্ক অ্যাডায়ারের বলে স্টেপ আউট করে মারতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ গিয়ে বসেন।
তিনি করেন ৫ বলে ৩ রান। কিষাণের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন সঞঢ্জু স্যামসন। কাফ নিগল থাকায় এই ম্যাচে খেলতে পারেননি ঋতুরাজ। কিষাণ ফেরার পর দুরন্ত পার্টনারশিপ গড়েন স্যামসন ও হুডা। ৪.৩ ওভারে জশ লিটলের বলে হুডাকে লেগ বিফোর দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান হুডা। তখন ব্যক্তিগত ১৪ রানে ব্যাট করছিলেন তিনি।
টি ২০ আন্তর্জাতিকে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এদিন ভারতের সর্বকালীন সেরা রান যোগ করেন হুডা-সঞ্জু। ৮৭ বলে ১৭৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন তাঁরা। এতে সঞ্জুর অবদান ৩৪ বলে ৬৭, হুডার ৫৩ বলে ৯৮। ভারত ২২৫ ১৬.২ ওভারে সঞ্জু স্যামসন আউট হন দলের ১৮৯ রানের মাথায়। ১৭.৩ ওভারে ২০৬ রানের মাথায় আউট হন সূর্যকুমার যাদব।
প্রথম ম্যাচে প্রথম বলেই আউট হয়েছিলেন সূর্য, এদিন ৫ বলে ১৫ রান করলেন। হুডা আউট হলে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ১৮ ওভারে ৪ উইকেটে ২১২ রান। শেষ অবধি ভারত তুলেছে ৭ উইকেটে ২২৫ রান। অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া ২টি চারের সাহায্যে ৯ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।
দীনেশ কার্তিক, অক্ষর প্যাটেল ও হর্ষল প্যাটেল তিনজনই শূন্য রানে আউট হন। প্রত্যেকেই ১ বলের বেশি টিকতে পারেননি। শেষ তিন ওভারে ভারত ৫টি উইকেট হারায়। তা না হলে স্কোর আরও বেশি হতে পারত। হোয়াইটওয়াশের অপেক্ষা তা সত্ত্বেও আইরিশদের পক্ষে ২২৬ রানের টার্গেট সফলভাবে তাড়া করার সম্ভাবনা কার্যত নেই।
ভারতের বোলিং বিভাগেও আজ পরিবর্তন হয়েছে। আবেশ খানের জায়গায় হর্ষল প্যাটেল ও যুজবেন্দ্র চাহালের পরিবর্তে খেলানো হচ্ছে রবি বিষ্ণোইকে। আয়ারল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সফলতম মার্ক অ্যাডায়ার।
তিনি ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। জশ লিটল ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে দুটি এবং ক্রেগ ইয়ং চার ওভারে ৩৫ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট দখল করেছেন।
দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেএল রাহুলকে। একইসঙ্গে ঋষভ পন্তকে তার একাদশে না রেখে সবাইকে চমকে দিয়েছেন তিনি। শুধু পান্ত নয়, গৌতম গম্ভীরও বিস্ফোরক ফিনিশার দীনেশ কার্তিককে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একাদশের বাইরে রেখেছেন।
গৌতম গম্ভীর অধিনায়ক হিসেবে রোহিত শর্মাকে বেছে নিয়েছেন এবং ওপেনিংয়ের জন্য রোহিতের সঙ্গে ঈশান কিশানকে রেখেছেন। এর বাইরে বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার এবং অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ড্যও ব্যাটিংয়ের জন্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। একই সময়ে, দীনেশ কার্তিকের জায়গায় ফিনিশারের ফিনিশার হিসাবে গৌতম গম্ভীর তার একাদশে দীপক হুডাকে বেছে নিয়েছেন।
যুজবেন্দ্র চাহাল, জাসপ্রিত বুমরাহ এবং হর্ষাল প্যাটেল ছাড়াও ভুবনেশ্বর কুমারকে বোলিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন গৌতম গম্ভীর। এটি লক্ষণীয় যে গৌতম গম্ভীর এমনকি মহম্মদ শামিকে তার একাদশে অন্তর্ভুক্ত করেননি।